কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 আবেদন পদ্ধতি, উদেশ্যে, সুবিধা,(Kanyashree Prakalpa new update)
সারা বিশ্বে বিশেষ করে নারীদের জন্য সামাজিক কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান করতে, ভারতীয় মহিলা জনসংখ্যার কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির মাধ্যমে কল্যাণমূলক কয়েকটি প্রকল্প আছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের চালু করা সবচেয়ে কার্যকরী কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো “কন্যাশ্রী প্রকল্প” যোজনা।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মহিলা উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগ দ্বারা 8 মার্চ 2013 সালে কন্যাশ্রী প্রকল্প যোজনাটির ডিজাইন করা হয়েছিল৷ এই প্রকল্পটির মাধ্যমে কন্যা শিশুর অবস্থার উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য রেখে একটি শর্তাধীন নগদ স্থানান্তর পরিকল্পনা হিসাবে কাজ করে৷
“কন্যাশ্রী প্রকল্প” এর উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দুর্বল পরিবারকে নগদ সহায়তার মাধ্যমে মেয়েদের জীবন ও অবস্থার উন্নয়ন করা , এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক গৃহীত একটি বিশেষ উদ্যোগ। যাতে অর্থনৈতিক সমস্যা থাকার কারণে কোনো পরিবার যেন আঠারো (18) বছর বয়সের আগে তাদের কন্যা সন্তানকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না করান।
আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাবো যে, পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প কী? উদ্দেশ্য, সুবিধা,বিভাগ কয়টি, যোগ্যতার মানদণ্ড,ফর্ম সংগ্রহ, আবেদনের পদ্ধতি,Status Check ইত্যাদি। তাই আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পেতে আগ্রহী হন তাহলে আপনি শেষ পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো ।
Table of Contents
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 তথ্য বিবরণ (Kanyashree Prakalpa
প্রকল্প নাম | পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প (West Bengal Kanyashree Prakalpa) |
এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা | পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Goverment of West Bengal) |
চালু করেছেন | পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |
বছর | 2023 |
বিভাগ নাম | মহিলা উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Department of Women Development and Social Welfare) |
সুবিধাভোগী | পশ্চিমবঙ্গের কন্যারা |
উদ্দেশ্য | পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের আর্থিক সাহায্য প্রদান করা যাতে তারা শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে। |
আবেদন পদ্ধতি | অফলাইনে |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | wbkanyashree.gov.in |
Helpline Number | 033-23373846 |
[email protected] |
“কন্যাশ্রী প্রকল্প” কী (Kanyashree Prakalpa)
আপনারা সকলেই জানেন যে, ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মেয়েদের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প চালু করেছে। আর তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত একটি নাম হলো “কন্যাশ্রী প্রকল্প”।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে “কন্যাশ্রী প্রকল্প” প্রকল্পের কথা প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত “কন্যাশ্রী প্রকল্প”। ইউনাইটেড নেশন অনারও জিতে নিয়েছে 2017সালে জুন মাসে। মেয়েদের একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত পড়াশোনায় উৎসাহ দানের জন্য এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়, যা খুবই উপযোগী।
“কন্যাশ্রী প্রকল্প” টি শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য। অবশ্যই তাদের অবিবাহিত হতে হবে তবেই তারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। 13 থেকে 18 বছর বয়সী প্রতিটি মেয়েদের পড়াশোনায় খরচ করার জন্য বছরে 1000 টাকা দেওয়া হয় এবং 18 বছরের পর মেয়েদের পড়াশোনার খরচ বা কোনো জীবিকায় যুক্ত হওয়ার জন্য 25,000 টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই কন্যাশ্রী প্রকল্পে। নারীশিক্ষার আরও প্রসারিত করার ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
যদি আপনার পরিবারের বাৎসরিক আয় হয় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা হয় তাহলে আপনি কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আপনার নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। কীভাবে এই প্রকল্পে আবেদন করবেন তা নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প কত সালে চালু হয়?
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার 2013 সালে 8 মার্চ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় “কন্যাশ্রী প্রকল্প” চালু করেছিল। এরপরে কন্যাশ্রী প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিক ভাবে বাস্তবায়ন করা হয় 2013 সালের 14 আগষ্ট। পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অনগ্রসর পরিবার থেকে উঠে আসা কমবয়সী মেয়েদের জীবন উন্নত করা।
পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প
“কন্যাশ্রী প্রকল্প” পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক গৃহীত শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, মে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দুস্থ পিছিয়ে থাকা পরিবার গুলোকে আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে তাদের কন্যা সন্তানের জীবন ও অবস্থার আরও উন্নয়ন করার জন্য। অর্থনৈতিক সমস্যা থাকার জন্য যাতে করে কোনো পরিবার কন্যা সন্তানের আঠারো বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিবাহ না দেয়।
অর্থাৎ এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য 18 বছর বয়স অবধি প্রত্যেক মেয়ে যেন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে ও তাদের সঠিক বয়সে বিয়ে দেওয়া। এছাড়াও, মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতির সাথে সাথে জীবন ও মর্যাদা উন্নত হবে।
পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প প্রকল্পের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক মেয়েরা তাদের শিক্ষার উন্নয়ন করার জন্য আর্থিকভাবে সহায়তা পাবে। 13 থেকে 18 বছর বয়সী মেয়েদের জন্য এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
“কন্যাশ্রী প্রকল্প” আরও অন্যতম একটি অভিপ্রায় হল, অর্থিনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা গরিব পরিবারের কন্যাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা। এই কন্যাশ্রী প্রকল্প নক্সা ও সুশাসন বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য ইতিমধ্যে অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।
এমন অনেক পরিবার আছে যাদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না থাকার জন্য তাদের কন্যা সন্তানরা পড়ালেখা করতে পারে না। এইসব পরিস্থিতি ঠিক করার জন্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকার মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 বিভাগ কয়টি ও কী কী
পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্পের অধীনে মহিলা উন্নয়ন ও সমাকল্যাণ দপ্তরের তরফ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের তিন ধরনের স্কলারশিপ প্রদান করে, যা নিম্নরূপ-
- বার্ষিক স্কলারশিপ (K1) –
2013-14 সালে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের বৃত্তির পরিমাণ ছিল 500/- টাকা যা এখন বেড়ে হয়েছে 1000/ টাকা। এই স্কলারশিপ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল , মেয়েদের বৈধ বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে পড়াশোনা করার জন্য।
- 13 থেকে 18 বছরের প্রতিটি অবিবাহিত মেয়েদের এই বৃত্তি প্রদান করা হয় ।
- অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত সব মেয়েদের জন্য।
- যেকোনো সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বা স্কুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।
2. এককালীন স্কলারশিপ (K2)-
মেয়েটির বয়স যখন 18 বছর থেকে 19 বছর বয়স হলে তাকে এককালীন 25,000 টাকা অনুদান করা হবে।তবে শর্ত থাকে যে অবিবাহিত থাকতে হবে আর একাডেমিক বা জীবিকা যুক্ত হয়।
3. কন্যাশ্রী বৃত্তি (K3)-
এই স্কলারশিপ প্রকল্পের দ্বারা যে সব শিক্ষার্থীরা কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে আছে তাদের মাসিক কিস্তিতে আর্থিক সাহায্য করা হয়।
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 কারা আবেদন করতে পারবেন ?
পশ্চিমবঙ্গের যে সব ছাত্রী 14 বছরের বেশি বয়স তারা এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে হবে । 13-18 বছর বয়স পর্যন্ত যে সব শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সমমানের বিদ্যালয়ে VIII- XII শ্রেনীতে পড়াশোনা করতে হবে। তাহলেই তারা কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদন করতে পারবে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পে 2024 আবেদনের যোগ্যতা (Kanyashree Prakalpa 2024 Eligibility)
কন্যাশ্রী প্রকল্পের তিনটি বিভাগে আবেদন করার জন্য যে সব যোগ্যতা থাকা দরকার ,তা নিচে আলোচনা করা হলো –
কন্যাশ্রী প্রকল্প K1 যোগ্যতা (Kanyashree K1 2024 Eligibility)
- অবশ্যই আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
- আবেদনকারীর বয়স 13-17 বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে।
- আবেদনকারীর পারিবারিক বাৎসরিক আয় 1,20,000 টাকার কম হতে হবে।
- আবেদনকারীর অবিবাহিত হওয়া এটি বাধতামূলক।
- আবেদনকারীকে সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হতে হবে।
- যদি কোন আবেদনকারী শারীরিক প্রতিবন্ধী বা ক্ষমতা সম্পন্ন হয়, যদি তার মা বাবা দুজনেই মৃত হয় তাহলে পারিবারিক বাৎসরিক আয়ের পরিবর্তন হবে ।
কন্যাশ্রী প্রকল্প K2 যোগ্যতা (Kanyashree K2 2024 Eligibility)
- অবশ্যই আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স 18 বছর বয়স শুরু হওয়ার পর এবং 19 বছর বয়স সম্পূর্ণ হওয়ার আগে এই স্কলারশিপে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনকারীর পারিবারিক বাৎসরিক আয় 1,20,000 টাকার কম হতে হবে।
- আবেদনকারীর অবিবাহিত হওয়া এটি বাধতামূলক।
- আবেদনকারীকে সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী হতে হবে।
- বিশেষ ক্ষেত্রে পারিবারিক বাৎসরিক আয়ের পরিবর্তন হবে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প K3 যোগ্যতা (Kanyashree K3 2024 Eligibility)
- অবশ্যই আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- যে সব শিক্ষার্থীরা কন্যাশ্রী K2 এর জন্য Register করেছে শুধুমাত্র তারাই K3 তে আবেদন করতে পারবেন।
- কন্যাশ্রী K3 এর জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই।
- অবশ্যই শিক্ষার্থীদের স্নাতক ডিগ্রিতে 45% নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
- সরকার স্বীকৃত যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশন এ ভর্তি হতে হবে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 প্রয়োজনীয় নথিপত্র (Kanyashree Prakalpa 2024 Required Documents)
কন্যাশ্রী প্রকল্প যোজনায় আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে যেসব প্রয়োজনীয় নথিগুলির জমা দিতে হবে, তা নীচে একটি তালিকায় দেওয়া রয়েছে-
- মেয়ের আধার কার্ড,
- মেয়ের জন্ম সনদ,
- রেশন কার্ড,
- অবিবাহিত সার্টিফিকেট,
- 1,20,000 টাকার কম পারিবারিক আয়ের শংসাপত্র,
- আবাসিক শংসাপত্র,
- শিক্ষাগত প্রমাণপত্র,
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিবরণ,
- পাসপোর্ট – সাইজের ছবি,
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 কীভাবে আবেদন করবেন? (How To Apply Kanyashree Prakalpa)
পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 এ আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে অবশই একটি নিজের নামের ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলতে হবে। তারপরে এই বৃত্তির জন্য সুবিধা অপবে। কিভাবে আবেদন কইবেন তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে –
কন্যাশ্রী প্রকল্প ফর্ম সংগ্রহ
প্রথমত, স্কুল বা প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। তাই আপনি বর্তমানে যে প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আছেন সেখান থেকে আপনি পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প আবেদনপত্র সংগ্রহ করবেন।
কন্যাশ্রী ফর্ম পূরণ
কন্যাশ্রী ফর্মটি ফিল আপ করার সময় আবেদনপ্রার্থীদের যে সব বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে, সেগুলি হল-
- প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো নামের বানান যেন সঠিক থাকে।
- একটি বৈধ মোবাইল নম্বর দিতে হবে।কারন এই প্রকল্প যাবতীয় তথ্য বিষয়ক এস.এম.এস. মোবাইলে মারফত আপনি জানাতে পারবেন ।
- ফর্মটি ফিল আপ করার জন্য অবশ্যই ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেতে হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বরটি সঠিকভাবে লিখতে হবে।
- অবশ্যই যেন কন্যাশ্রী ফর্মের এক, দুই ও তিন নম্বর পাতার একেবারে নীচের দিকে আবেদনকারীর হস্তাক্ষরে স্বাক্ষর করতে হবে।
নথি সংযুক্ত
- এর পরে, আপনি ফর্মটির সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করবেন ।
আবেদনপত্র জমা
- এরপরে আপনি নথিযুক্ত ফর্মটি স্কুল বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে জমা করতে হবে।
অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ (ACKNOWLEDGEMENT SLIP) যত্নে রাখবেন
- আবেদনকারী যখন কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদন ফর্মটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার কাছে জমা দেবেন, তখন প্রধান শিক্ষক স্বীকৃতির একটি রসিদ হিসেবে ফর্মের 3 নম্বর পাতাটি স্বাক্ষর ও স্কুল স্টাম্প করে আবেদনকারীকে ফেরত দেওয়া হবে। আবেদনকারীকা এটি খুব যত্ন সহকারে রাখবে ভবিষ্যতের জন্য। অর্থাৎ আপনি যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন–এই অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ (ACKNOWLEDGEMENT SLIP) তার প্রমাণ।
এছাড়াও কন্যাশ্রী K2 ও কন্যাশ্রী K3 এর জন্য wbkanyashree.gov.in ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে পারবেন।আবেদন পত্র জমা দেওয়ার পরে মোবাইল নাম্বারে একটি আইডি নাম্বার আসবে , সেটি হলো তোমার কন্যাশ্রী প্রকল্পের আইডি । এই নম্বর দিয়ে আ্যপ্লিকেশন স্যাটাস চেক করতে পারবেন
কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 স্ট্যাটাস চেক(Kanyashree Prakalpa Status Check)
কন্যাশ্রী প্রকল্পের স্থিতি পরীক্ষা বা Status Check করার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন-
- প্রথমে আপনি কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিসিট করুন।
- এরপরে “Track Application” এ ক্লিক করুন।
- এখানে ক্লিক করার পরে আপনি সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য বিবরণ লিখুন , যেমন – বছর (Year), স্কিমের ধরন (Type of Scheme), আবেদনকারী আইডি (Applicant Id) এবং জন্ম তারিখ (Date of Birth), তারপর “Submit” অপশনে ক্লিক করুন।
- আবেদন পত্র মঞ্জুর হওয়ার পর সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বৃত্তির টাকা ট্রানফার করা হয়।
কন্যাশ্রী প্রকল্প উদ্দেশ্যগুলি কী কী?
পশ্চিমবঙ্গ সরকার কন্যাশ্রী প্রকল্প 2023-এর মূল উদ্দেশ্য হল মেয়েদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা। প্রতিটি মেয়ে যেন তাদের উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে এবং সঠিক বয়সে বিবাহ করতে পারে
- কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিটি মেয়ে উৎসাহিত হবে স্কুলে যেতে ও তাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে পারবে ।
- কন্যাশ্রী প্রকল্পটি মূলত প্রাথমিকভাবে বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চালু করা হয়েছে। কমপক্ষে 18 বছরের নিচে কোন মেয়ের বিয়ে না হয় ।
- প্রত্যেক অভিভাবকরা চাই তাদের মেয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যা থাকার জন্য তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর এই সমস্যা দূর করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতি বছরে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে, মেয়েরা যেন তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যায়।
- মেয়েদের দক্ষতার বিকাশের সাথে সাথে প্রশিক্ষণের সুযোগ দিয়ে তাদের ক্ষমতা উন্নয়ন করা হচ্ছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
- সামগ্রিক ভাবে বলা যায়, কন্যাশ্রী প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো কন্যা সন্তানদের জীবন উন্নত করা ও সেই সাথে তাদের দক্ষতা ও শিক্ষা সহ আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে।
- কন্যাশ্রী প্রকল্পটি সামাজিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সম্প্রদায়ের আচরণগত পরিবর্তন বৃদ্ধি করে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প সুবিধা
পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্পের পরিকল্পনা 2023 এর অধীনে পশ্চিমবঙ্গের মেয়েরা তাদের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য আর্থিক সাহায্য পাবে
- এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিটি মেয়ে যেন 18 বছর বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারে ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ করা ।
- এই প্রকল্পের দ্বারা মেয়েদের মর্যাদা ও অবস্থার উন্নতি হবে।
- এই প্রকল্পের আওতায় নথিভুক্ত মেয়েদের প্রতি বছর 750 টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
- যে সব মেয়েরা অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত বা 13 থেকে 18 বছর বয়সী মেয়েদের আর্থিক সাহায্য করা হয়।
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার কন্যাশ্রী প্রকল্প 2023 নথিভুক্ত মেয়েদের 18 বছর বয়সে এককালীন অনুদান 25,000 টাকা দেওয়া হবে।
- এই প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে।
কন্যাশ্রী প্রকল্প কোন বিভাগে কত টাকা পাবে?
কন্যাশ্রী প্রকল্প | টাকার পরিমান |
বার্ষিক বৃত্তি (kanyashree K1) | প্রতি বছর 750 টাকা |
এককালীন অনুদান (kanyashree K2 ) | 25,000 টাকা |
মাসিক বৃত্তি (kanyashree K3) | প্রতি বছর বিজ্ঞান বিভাগ এর জন্য 2,500 টাকা এবং কলা বিভাগ এর জন্য 2,000 টাকা। |
কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
কন্যাশ্রী প্রকল্প Renewal ও আপগ্রেড করার নিয়ম
যে সকল শিক্ষার্থীরা একবার কন্যাশ্রী প্রকল্পের কন্যাশ্রী K1 স্কলারশিপের জন্য আবেদন করলে। তারপর তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রত্যেক বছর তাদের আবেদন পুনর্নবীকরণ করবেন। যতদিন না তারা 18 বছর বয়সে পৌঁছবে।
কিন্তু এই পুনর্নবীকরণ বা Renewal করার সময় শিক্ষার্থীদের অবিবাহিত সম্পর্কে একটি স্ব-ঘোষণা জমা দিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের বয়স যখন 18 বছর হয় তখন তাদের আবেদন কন্যাশ্রী K1 থেকে কন্যাশ্রী K2 তে আপগ্রেড করা হতে পারে।
প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কন্যাশ্রী K2 স্কলারশিপ করার জন্য একটি আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিতে হবে। এরপরে এককালীন স্কলারশিপের 25,000 টাকা শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা কবে পাবে?
কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদন পত্র সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে জমা দেওয়া হয়ে গেলে। এরপরে আবেদনের সব তথ্য বা ডাটা কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আপলোড করা হবে। এখানে বেশ কিছু পদক্ষেপ আছে সেগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে শিক্ষার্থী টাকা পাবে। আবেদন পত্র আ্যপ্রুভ হলেই সবাই নিজের ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যাবেন। এছাড়াও কন্যাশ্রী প্রকল্পের স্যাটাস চেক করার জন্য এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করে দেখতে পারেন।
আর যদি কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার 2 মাস পরেও যদি টাকা না পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেই সব শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
কীভাবে কন্যাশ্রী অ্যাপ ডাউনলোড করবেন?
আপনি যদি কন্যাশ্রী প্রকল্পের অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চান তাহলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন-
- প্রথমে আপনি কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন ।
- তারপরে আপনার সামনে হোম পেজ আসবে
- সেখানে কন্যাশ্রী অ্যাপ ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করুন।
- এরপরে আরো একটি নতুন পেজ খুলবে।
- এখন আপনি Insatall অপশনে ক্লিক করুন।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের যোগাযোগের তথ্য
যদি কন্যাশ্রী প্রকল্প সম্পর্কে কারো কোন প্রশ্ন বা সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন
Kanayashree Prakalpa Helpline number -0330-23373846
email id- [email protected]
কন্যাশ্রী প্রকল্পের শেষ কথা
কন্যাশ্রী প্রকল্প কন্যা শিশু ও নারীদের জন্য যথেষ্ট সম্মানজনক এবং স্বাধীনভাবে জীবন যাপনের জন্য শিক্ষার একটি ভালো ভিত্তি স্থাপন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কন্যাশ্রী প্রকল্প মূলত একটি উন্নত সমাজের পরিকল্পনা করে যা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য প্রভাবশালী জ্ঞানকে উৎসাহিত করে। আসলে এই প্রকল্পটি মহিলাকে উন্নত পরিচয় ও বিমূর্ত যুক্তি প্রদানের ক্ষমতা অর্জনে ব্যপক সহায়তা করে।
Q. কন্যাশ্রী আইডি কিভাবে পাবো?
কন্যাশ্রী পোর্টালে আপনার আবেদন জমা হয়ে গেলে , মোবাইল নাম্বারে একটি আইডি নাম্বার আসবে , সেটি হলো তোমার কন্যাশ্রী প্রকল্পের আইডি । এই নম্বর দিয়ে আ্যপ্লিকেশন স্যাটাস চেক করতে পারবেন
Q. কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 এ কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে কিভাবে যোগাযোগ করতে হবে ?
এই কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 জন্য আবেদন করার সময় যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে আবেদনকারীরা [email protected] ও 033-23373846 নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবে।
Q. কন্যাশ্রী প্রকল্প 2024 এ ফর্ম কোথা থেকে সংগ্রহ করতে হবে ?
মেয়েদের সরকারী স্কুল বা প্রতিষ্ঠান থেকে কন্যাশ্রীর জন্য ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। তাই আপনি বর্তমানে যে প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আছেন সেখান থেকে আপনি পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প আবেদনপত্র সংগ্রহ করবেন।বার্ষিক টাকা পাওয়ার জন্য – ‘কে ওয়ান’ (K-1)। আর এককালীন টাকা পাওয়ার জন্য ‘কে টু’ (K-2)ফর্ম সংগ্রহ করবে।
Q. কন্যাশ্রী প্রকল্পের লক্ষ্য কি ?
কন্যাশ্রীপ্রকল্পের লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের জীবন ও অবস্থার উন্নয়নের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সরকারের পক্ষ থেকে গৃহীত একটি উদ্যোগ।কোনো পরিবার যেন অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে আঠারো বছর বয়সের আগে তাদের কন্যা সন্তানের বিয়ে না দেয়।
Q. কন্যাশ্রী কত বছর বয়সে পাওয়া যায়?
অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের মেয়েদের 13 থেকে 18 বছর বয়সে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি উদ্যোগ হলো কন্যাশ্রী প্রকল্প।
Q. কন্যাশ্রী প্রকল্প কত প্রকার ?
এই কন্যাশ্রী প্রকল্প এর তিনটি উপাদান রয়েছে, যথা –
কন্যাশ্রী k1:- বার্ষিক বৃত্তি 1000- টাকা
কন্যাশ্রী k2:- এক কালীন 25000/- টাকা বৃত্তি
কন্যাশ্রী k3:- মাসিক 2000-2500- টাকা বৃত্তি
আরও পড়ুন –